বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

‘ক্যাসিনো সম্রাট’ গ্রেপ্তার হলেন যেভাবে

‘ক্যাসিনো সম্রাট’ গ্রেপ্তার হলেন যেভাবে

স্বদেশ ডেস্ক:

‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে আলোচিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। আজ রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সম্রাটকে গ্রেপ্তারের বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে ঢাকাতেই অবস্থান করছিলেন সম্রাট। এ সময় তিনি গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে ছিলেন। ঢাকায় তিনি প্রভাবশালী নেতার বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

এদিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের যে এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামটি সীমান্তের কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামের যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেটি সম্রাটের আত্মীয়ের বাসা। বাড়িটি মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির। তবে তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গভীর রাতে ওই এলাকায় একটি বাড়ি র‌্যাব ঘিরে রাখে। পরে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

আলকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি এলাকায় ছিলেন না। তবে স্থানীয়রা তাকে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন।

প্রসঙ্গত, আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। রাজধানীর বেশ কয়েকটি ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো সম্রাটের ইশারাতেই পরিচালিত হতো। রাতের পর রাত তার শেল্টারেই রাজধানীতে জুয়ার আসর বসতো।

তবে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে লাপাত্তা হয়ে যান যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের এই সভাপতি। সে সময় তাকে না পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে তার ডান হাত হিসেবে পরিচিত রাজধানীর ইয়াংমেনস ক্লাবের মালিক ও যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে।

এর আগে সম্রাটকে গ্রেপ্তার নিয়ে সৃষ্টি হয় ধোঁয়াশা। তিনি কোথায় ছিলেন তার কোনো সূত্র পাচ্ছিল না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের একের পর এক গ্রেপ্তারের সময় তাকে দুই একবার তার কাকরাইলের কার্যালয়ে দেখা গেলেও খালেদ মাহমুদের গ্রেপ্তারের পর আড়ালে চলে যান এই যুবলীগ নেতা।

এর আগে সম্রাটকে গ্রেপ্তারের গুঞ্জন ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটবে দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটি বলছি ‘সম্রাট’ হোক আর যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। ‘আমি এটি এখনও বলছি- সম্রাট বলে কথা নয়; যে কেউ আইনের আওতায় আসবে। আপনারা সময় হলেই দেখবেন।’

এদিকে ক্যাসিনোকাণ্ডে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা জিকে শামীম, কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ও মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। জানা গেছে, রিমান্ডে নেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই সম্রাটের নাম উল্লেখ করেছিলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877